বৃহস্পতিবার, ২৪ আগস্ট, ২০১৭

বিদায়_হজ্বের_ভাষন

বিদায়_হজ্বের_ভাষন
নবীজির (সাঃ) বিদায় হজ্জের ভাষন। নবীজি উনার ভাষনে বলে গিয়েছিলেন যাতে প্রত্যেকে এই মহান ভাষনটি সবার কাছে পৌছে দেয়। তাই আপনারাও প্লিজ শেয়ার করুন।
নিঃশ্চই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষন >>
শুক্রবার ৯ জিলহজ্ব ১০ হিজরি সনে হজ্জের সময় আরাফা ময়দানে দুপুরের পর হযরত মুহাম্মদ (স) লক্ষাধিক সাহাবীর সমাবেশে এ ঐতিহাসিক ভাষন দেন হামদ ও সানার পর তিনি বলেন:-
• হে মানুষ!
তোমরা আমার কথা শোনো.এর পর এই স্থানে তোমাদের সাথে আর একত্রিত হতে পারবো কিনা জানিনা!
••হে মানুষ
আল্লাহ বলেন.হে মানবজাতি তোমাদেরকে আমি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি,এবং তোমাদেরকে সমাজ ও গোত্রে ভাগ করে দিয়েছি. যেন তোমরা পরস্পরের পরিচয় জানতে পার,অতএব শুনে রাখো মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই ।আরবের ওপর কোনো অনারবের_অনারবের উপর কোনো আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই । তেমনি সাদার উপর কালোর বা কালোর উপর সাদার কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই । তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশী সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী,যে আল্লাহকে ভালবাসে।
•••হে মানুষ !
শুনে রাখো অন্ধকার যুগের সকল বিষয় ও প্রথা আজ থেকে বিলুপ্ত হলো.জাহিলি যুগের রক্তের দাবিও রহিত করা হলো।
••••হে মানুষ !
শুনে রাখো,অপরাধের দায়িত্ব কেবল অপরাধীর ওপরই বর্তায় । পিতা তার পুত্রের জন্যে আর পুত্র তার পিতার অপরাধের জন্য দায়ী নয়।
•••••হে মানুষ!
তোমাদের রক্ত তোমাদের সম্মান,তোমাদের সম্পদ পরস্পরের জন্য চিরস্থায়ী ভাবে হারাম অর্থাৎ পবিত্র ও নিরাপদ করা হলো যেমন আজকের এই মাস এই শহর সকলের জন্য পবিত্র ও নিরাপদ।
••••••হে মানুষ!
তোমরা ঈর্ষা ও হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দুরে থাকবে ঈর্ষা ও হিংসা মানুষের সকল সৎগুনকে ধ্বংস করে।
•••••••হে মানুষ!
নারীদের সম্পর্কে আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি,তাদের সাথে নিষ্ঠুর আচরণ করোনা, তাদের উপর যেমন তোমাদের অধিকার রয়েছে তেমনি তোমাদের উপর তাদেরও অধিকার রয়েছে সুতরাং তাদের কল্যাণের দিকে সবসময় খেয়াল রেখো।
••••••••হে মানুষ!
অধীনস্থদের সম্পর্কে সতর্ক হও.তোমরা নিজেরা যা খাবে তাদেরও তা খাওয়াবে.নিজেরা যা পরবে তাদেরও তা পরাবে,শ্রমিকের শরীরের ঘাম শুকানোর আগেই তার মজুরি পরিশোধ করবে ।
•••••••••হে মানুষ!
বিশ্বাসী সেই ব্যক্তি যার হাত ও মুখ থেকে অন্যের সম্মান,ধন ও প্রাণ নিরাপদ, সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে অন্যের জন্যেও তাই পছন্দ করে ।
••••••••••হে মানুষ!
বিশ্বাসীরা পরস্পরের ভাই,সাবধান ! তোমরা একজন আরেকজনকে হত্যা করার মতো কুফরি কাজে লিপ্ত হয়ো না।
•••••••••••হে মানুষ!
শুনে রাখো আজ হতে বংশগত শ্রেষ্ঠত্ব বা কৌলিনপ্রথা বিলুপ্ত করা হলো কুলীন বা শ্রেষ্ঠ সেই যে বিশ্বাসী ও মানুষের উপকার করে।
••••••••••••হে মানুষ!
ঋণ অবশ্যই ফেরত দিতে হবে.বিশ্বস্ততার সাথে প্রত্যেকের আমানত রক্ষা করতে হবে,কারো সম্পত্তি সে যদি স্বেচ্ছায় না দেয়,তবে তা অপর কারো জন্য হালাল নয় । তোমরা কেউ দুর্বলের উপর অবিচার করো না।
•••••••••••••হে মানুষ!
জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও মূল্যবান.জ্ঞান অর্জন প্রত্যেক নর-নারীর জন্য ফরয-কারন জ্ঞান মানুষকে সঠিক পথ দেখায় । জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজনে তোমরা চীনে যাও।
••••••••••••••হে মানুষ!
তোমরা তোমাদের প্রভুর ইবাদত করবে,নামায কায়েম করবে.যাকাত আদায় করবে,রোজা রাখবে হজ্ব করবে আর সংঘবদ্ধ ভাবে নেতাকে অনুসরণ করবে তাহলে তোমরা জান্নাতে দাখিল হতে পারবে।
•••••••••••••••হে মানুষ!
শুনে রাখো একজন কুশ্রী-কদাকার ব্যক্তিও যদি তোমাদের নেতা মনোনীত হয়.যতদিন পর্যন্ত সে আল্লাহর কিতাব অনুসারে তোমাদের পরিচালিত করবে,ততদিন পর্যন্ত তার আনুগত্য করা তোমাদের অবশ্য কর্তব্য।
••••••••••••••••হে মানুষ !
শুনে রাখো আমার পর আর কোনো নবী নেই । হে মানুষ আমি তোমাদের কাছে দুটি আলোকবর্তিকা রেখে যাচ্ছি.যতদিন তোমরা এ দুটো অনুসরণ করবে ততদিন তোমরা সত্য পথে থাকবে এর একটি হলো-আল্লাহর কিতাব.দ্বিতীয়টি হলো-আমার জীবন-দৃষ্টান্ত।
•••••••••••••••••হে মানুষ!
তোমরা কখনোই ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না- কারন অতীতে বহু জাতি ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির কারনে ধ্বংস হয়ে গেছে।
••••••••••••••••••হে মানুষ!
প্রত্যেককেই শেষ বিচারের দিনে সকল কাজের হিসেব দিতে হবে । অতএব, সাবধান হও।
•••••••••••••••••••হে মানুষ!
তোমরা যারা এখানে হাজির আছো,আমার এই বাণীকে সবার কাছে পৌঁছে দিও
{এরপর তিনি জনতার উদ্দেশ্যে জিজ্ঞেস করলেন,হে মানুষ আমি কি তোমাদের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছি,সকলে সমস্বরে জবাব দিলো : হ্যাঁ এরপর নবীজী (স:) বললেন হে আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাকো! আমি আমার সকল দায়িত্ব পালন করেছি }
আমিন..





বুধবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৭

সীমান্তের নীলাঞ্জনা পর্ব ৩ সীমান্তের অতীত

.সীমান্তের নীলাঞ্জনা 

পর্ব ৩:  সীমান্তের অতীত 

 চোখের উপর সূর্যের আলো পড়ার সাথে সাথে ঘুম ছোটে সীমান্তের। ঘড়িতে তখন সকাল ৯.৩০ বাজে।কখন যে বাগানে দোলনার উপর ঘুমিয়ে পড়েছিল  বলতে পারবে  না। আড়মোড়া দিতে দিতে বাড়িতে ঢুকতে গেলে পরেশ এসে সামনে দাঁড়ায়-

পরেশ : বাবু তুমি আবার বাগানে ঘুমিয়ে ছিলে, তোমাকে না বলেছি বাগানে এভাবে ঘুমাবে না। 

সীমান্ত: ভুল হয়েছে, আর হবে না। 

পরেশ : তুমি এই ভাবে যন্ত্রনা দিলে একদিন সব ছেড়ে চলে যাবো।

সীমান্ত: (মুচ্কি হেসে ) এই পৃথিবীতে তোমার ও আমার কেউ নাই। আমাকে ছেড়ে তুমি কোথায় যাবে?

পরেশ : এই জন্যই এত যন্ত্রনা দাও। 

সীমান্ত : আহ! বললাম তো, আর হবে না। আচ্ছা ভালো কথা সেই মেয়েটি কোথায়? সে কি নাস্তা করেছে?

পরেশ : না, ঘুম থেকে উঠেছে মাত্র।

সীমান্ত: ঠিক আছে টেবিল এ আমাদের দুজনের জন্য নাস্তা নিয়ে এসো, আর ওকে ডাক দাও। 
পরেশ: ঠিক আছে। 

এটা বলে পরেশ নাস্তা তৈরি করতে চলে গেল আর সীমান্ত ডাইনিং টেবিল এ বসলো।সংবাদপত্রের উপর চোখ বুলাতে বুলাতে যখন মেয়েটির উপর চোখ পড়ল, তখন মনে হলো মেয়েটি সত্যিই খুব সুন্দর।  চোখের পলক যেন পড়তেই চায় না।  এভাবে কিছুক্ষন অপলক তাকিয়ে থাকার পর নীলাঞ্জনার আওয়াজ শুনে নিস্তব্ধতা কেটে যায় -----

নীলাঞ্জনা: আর কেউ খাবে না।

সীমান্ত : কে খাবে ?

নীলাঞ্জনা: কেন এই বাড়িতে আর কেউ নেই ?

সীমান্ত: এই বাড়িতে আমি আর পরেশ ছাড়া কেউ নেই।  একসময় সবই ছিল কিন্তু বাড়ি ছিল না। এখন বাড়ি আছে   কিন্তু এখানে থাকার মতো কেউ নেই। (এ কথা বলার সাথে সাথে নাস্তা না করে ডাইনিং টেবিল ছেড়ে উঠে গেলো সীমান্ত )

নীলাঞ্জনা: নাস্তা না করে উনি এভাবে উঠে গেলেন কেন?

পরেশ : বাবুর মা বিনা চিকিৎসায় মারা গেছে। এরপর থেকে বাবু এমন হয়ে গেছে, বাবুর মনে অনেক দুঃখ। যদি পারতাম ভগবানের কাছ থেকে নিজের জীবনের বিনিময়ে তার জীবনে সুখ এনে দিতাম।

এই কথা শুনে নীলাঞ্জনা ও না খেয়ে উঠে যাচ্ছিলো ____

পরেশ : একি মা। আপনি খাবেন না।

নীলাঞ্জনা: এভাবে রাখুন, আমি উনাকে নিয়ে আসছি।

খুঁজতে খুঁজতে নীলাঞ্জনা সীমান্তকে বাগানে দেখতে পায়।  তখন ________

নীলাঞ্জনা: সরি, আমি মনে করতাম আমি হয়তো প্রথিবী তে সবচেয়ে দুঃখী, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমার চেয়ে দুঃখী আপনি।

সীমান্ত: সরি। আসলে আমার ঐভাবে রিয়াক্ট করা উচিত হয়নি।

নীলাঞ্জনা : আমি কি এইখানে বসতে পারি?

সীমান্ত : ও নিশ্চয়ই।

নীলাঞ্জনা : যদি কিছু মনে না করেন, আপনার অতীত সম্পর্কে জানতে চাই।

সীমান্ত : কি হবে জেনে? শুধু শুধু দুঃখ বাড়বে।

নীলাঞ্জনা : না বরং শেয়ার করলে দুঃখ কমবে।

সীমান্ত : ঠিক আছে তবে শুনুন ____

আমার বাবা ছিলেন বড় ব্যাবসায়ী।  আমাদের ছিল যৌথ পরিবার। তাই বাবার সাথে কাকাও তার ব্যবসার পার্টসহযোগী ছিলেন। হটাৎ এক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা নিহত হন। তখন আমি ৯ম শ্রেণীতে পড়ি।  মূলত তখন থেকে আমাদের জীবনে নেমে আসে এক দুঃখের পাহাড়।  কাকা মাকে নানা অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে বেদখল করে দেন। তখন আমরা আমার মামার বাসায় আশ্রয় নেই।  কিন্তু সেখানেও আমরা সুখে ছিলাম না।  সেখানে মা কাজের বুয়ার মতবাড়ির সব কাজ করত। আর আমার বাড়ির বাজার সোহো ছোট কাজ করতে হতো। মা এত দুঃখে থেকে ও কখনো বুজতে দিতেন না। রাতের বেলায় সব কাজ শেষ করে যখন শুয়ে শরীর ব্যথায় কষ্ট পেতেন তখন যদি আমি মালিশ করতে যেতাম, তখন আমায় বলতো, এই বেথা কিছু না তুই যেদিন মানুষ এর মত মানুষ হবি সেদিন আমার কোনো বেথা থাকবে না, সেদিন আমি হবো দুনিয়ার সবচেয়ে সুখী মানুষ।

মা বুঝতে পারছিলেন ঐখানে আমার পড়াশুনায় অসুবিধা হচ্ছে।  তাই এস. এস.সি পাশের পর আমাকে হোস্টেল এ থেকে পড়াশুনা করতে বললেন আর বের হওয়ার বললেন আর সহজে  যেন বাসায় না যাই । সেই থেকে শুরু হোস্টেল জীবন মনে হয় পাঁচ বছরে মাত্র ১০-১২দিন ছিলাম। যখন বাংলা কলেজে অনার্স ২য় বর্ষে পড়ি, হটাৎ একদিন বাসা থেকে ফোন আসলো, বলা হলো তৎক্ষণাৎ যেন বাসায় যাই। কাউ কে কিছু না বলেই বেরিয়ে পড়ি বাড়ির উদ্দেশ্যে, পরে বাসায় ঢুকতেই দেখি মা আমাকে ছেড়ে অজানার উদ্দেশে যাত্রা করেছে, সে মাকে দাহ করার সাথে সাথে মনে হচ্ছিলো যেন আমি আমাকে দাহ করে ফেলেছি। পরে শুনতে পেলাম মা যক্ষা ও হার্ট এটাকে মারা গেছে।  তখন থেকে প্রতিজ্ঞা করেছি টাকা উপার্জন জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য।  এখন আমার সব আছে কিন্তু দেবী রুপী মাই আমার সাথে নেই(এই বলে অঝোরে কাঁদতে লাগলো সীমান্ত)।

নীলাঞ্জনা : প্লিজ কাঁদবেন না।  থামুন (নিজের চোখ মুছতে মুছতে বলে)।

সীমান্ত: একি! আমি আপনাকেও ইমোশনাল করে দিলাম। নাস্তা করেছেন আপনি।

নীলাঞ্জনা : না ভেবেছিলাম একসাথে করব। ১২.২০ বাজে। এখন এর করবো না।

সীমান্ত : চা খাবেন নিশ্চয়ই।

নীলাঞ্জনা: খাওয়া যেতে পারে।

সীমান্ত : পরেশ।

পরেশ : জি বাবু।
           
সীমান্ত : আমাদের দুই কাপ চা দাও।  নাস্তা টেবিল থেকে তুলে ফেলো। তোমার জন্যেও চা বানাও, জানি তুমি ও নাস্তা করো নি।

পরেশ : ঠিক আছে বাবু। এই বলে চলে গেল।

নীলাঞ্জনা : আমি চলে যেতে চাইছি।

সীমান্ত : আর কিছুদিন থেকে গেলে হতো না।

নীলাঞ্জনা : না। আপনার আর কষ্ট বাড়াতে চাই না।

সীমান্ত : না, কষ্ট নয়।  বরং ভাল লাগতো কারণ এই বাড়িতে আমরা দুইজন ছাড়া আর কেউ নেই। তাই থাকলে গল্প করা যেত। একটি রিকোয়েস্ট করবো।

নীলাঞ্জনা : করুন।

সীমান্ত :  কিছু মনে না করলে শাড়িটা চেঞ্জ করে ফেলুন।

নীলাঞ্জনা : নিশ্চয়। শাড়িটা কার?

সীমান্ত : আমার মায়ের।

নীলাঞ্জনা : ঠিক আছে।  আমি চেঞ্জ করে আসছি।

এই বলে নীলাঞ্জনা বাড়ির ভেতরে গেল। ততক্ষনে পরেশ চা নিয়ে বাগানে চলে এসেছে __

পরেশ : বাবু চা নাও।

সীমান্ত : দাও।

পরেশ : বাবু, একটা কথা বলব।

সীমান্ত : হ্যা।  বলো

পরেশ : দিদির জন্য কিছু কাপড়  কিনে নিয়ে এস।

সীমান্ত: ও তাইতো। আমার তো মনেই ছিল না।  ঠিক আছে, আনবো।

 ততক্ষনে নীলাঞ্জনা বাগানে চলে এসেছে এবং দুইজন মিলে চা খেতে শুরু করল। _______




মঙ্গলবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৭

জাতীয় শোক দিবস ২০১৭ ও কিছু প্রশ্ন

জাতীয় শোক দিবস ২০১৭ ও কিছু প্রশ্ন 

যতদিন রবে পদ্মা মেঘনা 
                      গৌরী  যমুনা বহমান 
ততদিন রবে কীর্তি তোমার
                         শেখ মুজিবুর রহমান 

আজ ১৫ ই অগাস্ট, মহান শোক দিবস।  ১৯৭৫ সনে ১৫ ই অগাস্ট বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে একদল বিপথগামী সেনাদলের হাতে নির্মমভাবে নিহত হন, (ইন্না লিল্লাহি ---- রাজিউন)  আজ অবশ্যই বাঙ্গালী ও বাঙালি জাতিসত্তার জন্য একটি শোকের দিন, দুঃখের দিন। কিন্তু আজ আমি আমার মনের কিছু অব্যক্ত কথা বলবো, এতে যদি আমি মনের অজান্তে কাউকে দুঃখ দিয়ে থাকি তবে ক্ষমা চাইছি, দয়া করে মাফ করে দিবেন। 



স্বাধীনতার প্রায় ৪৬ বছর এবং  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপরিবারে হত্যার ৪২ বছর পরে ও যখন দেখি জাতির পিতার প্রশ্নে জাতির বিভাজন, মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বাগযুদ্ধ, জাতীয় চার নেতার হত্যার বিচার শেষ না হওয়া এই বিষয় গুলো আমাকে খুব কষ্ট দেয়।  আজ বিশ্বের যে কোনো দেশের দিকে তাকাই না কেন, তারা রাজনৈতিক সত্তায় পার্থক্য থাকলেও জাতির পিতার প্রশ্নে তারা অভিন্ন, এমনকি যাদের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই পাকিস্তান ও জাতির নেতার প্রশ্নে এক।
  
তবে আমাদের মধ্যে এত পার্থক্য কেন? আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই, বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ এর সম্পদ, বাঙ্গালী সত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ ও আস্থার প্রতীক। তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সম্পদ নয়। তাহলে কেন আমরা তাঁকে দল ও মত নির্বিশেষে তাকে জাতির পিতা হিসাবে মানতে পারছি না। কি তার অপরাধ ? আমার মনে হয় যারা মানতে পারছেন না তারা স্বাধীনতা চায়নি, অথবা তাদের মানসিক সমস্যা আছে।  আমি  কয়েকজন বয়জেষ্ঠ্য মানুষদের প্রশ্ন করেছিলাম তারা অনেকে অনেক ধরণের মন্তব্য করেছিল। এই বিষয়ে আমার মোট হলো, ধরে নিলাম উনাদের অভিযোগ সঠিক, তাই বলে কি একজনের ভুল -এর শাস্তি ১৭ জনের হত্যাকান্ড। দেশে কি কোনো বিচার ব্যবস্থা ছিল না।  যাইহোক আমি যার জন্যে লিখতে বসেছি , কিছুদিন আগে আমের এক বন্ধু দুঃখ করে বলছিল আমরা এমন এক জাতি যাদের সরকার পরিবর্তন -এর সাথে সাথে জাতির পিতা পরিবর্তন হয়, তখন এই কথা শুনে নিজেকে খুব ছোট ও অসহায় মনে হলো।  তাই বিভিন্ন বই ও ওয়েবসাইট খুঁজে এই লিখা পাঠকদের কাছে তুলে ধরছিঃ 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  এর সংক্ষিপ্ত জীবনী 


পারিবারিক জীবন বৃত্তান্ত :

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় 17 মার্চ, 19২0 সালে একটি সম্মানজনক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফুর রহমান এবং মাতা সাইরা বেগমের তৃতীয় সন্তান ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।১৮ বছর বয়সে শেখ মুজিবুর রহমান বেগম ফজিলাতুন্নেছাকে  বিয়ে করেন। পরে তারা দুই কন্যা, শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও তিন পুত্র, শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেলের বাবা হয়ে ওঠেন।

শিক্ষা জীবন :
সাত বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু জিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা শুরু করেন। নয় বছর বয়সে, তিনি গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি হন। পরে, তাকে স্থানীয় মিশনারি স্কুলে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৪২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করেন। এরপর তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের মানবিক অনুষদের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে সম্মান ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। 

রাজনৈতিক জীবন :
ছোটবেলা থেকে তার জীবনে নেতৃত্বের ভাব ফুটে ওঠে। ১৯৩৯ সালে যখন অবিভক্ত বাংলার মুখ্যমন্ত্রী  'শেরেবাংলা' এ কে ফজলুল হক, হুসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাথে স্কুল পরিদর্শনে এসেছিলেন তখন তিনি ছাত্রদের একটি গ্রুপ নেতৃত্বে স্কুলের তীক্ষ্ণ ছাদ মেরামত করার জন্য অনুরোধ করেছেন, একই বছর বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান নির্মাণের আন্দোলনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত হন । 

মুজিব ১৯৪০ সালে অল ইন্ডিয়া মুসলিম স্টুডেন্টস ফেডারেশনে যোগদান করেন এবং ১৯৪৩ সালে বঙ্গীয় মুসলিম লীগে যোগদান করেন যেখানে তিনি হুসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নিকট এসেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্র লীগ প্রতিষ্ঠা করেন।

ভাষা আন্দোলন
মুজিব ছাত্রদের ধর্মঘট এবং বিক্ষোভ যখন ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান প্রথম ভাষণে আবির্ভূত হয় এবং ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত আন্দোলন সংগঠিত করার জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে।

রাজনীতির পথে চলা
তিনি আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনের জন্য সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা ভাসানীকে যোগদানের জন্য মুসলিম লীগ ত্যাগ করেন। তিনি ১৯৫৩ সালে দলের প্রথম যুগ্ম সচিব এবং তারপর সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুজিব পূর্ব পাকিস্তান আইন পরিষদে নির্বাচিত হন এবং কৃষি মন্ত্রী হন। ১৯৫৬ সালে তিনি বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় জোট সরকারে যোগদান করেন।

ছয় দফা প্রস্তাব:
১৯৬৩ সালে সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুর পর শেখ মুজিব আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি আইয়ুব খানের মৌলিক গণতন্ত্রকে কঠোরভাবে বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি ১৯৬৬ সালে লাহোরের বিরোধী রাজনৈতিক দলের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে 6-দফা দাবি ঘোষণা করেন।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা
মুজিবের 6 দফা দাবির জন্য জনসমর্থনের ভয় ছিল, তৎকালীন পাকিস্তানি সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে, কিন্তু বিপুল জনসাধারণের অস্থিরতায় তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। ১৯৬২ সালের ৫ ই  ডিসেম্বর তিনি ঘোষণা করেন যে পূর্ব পাকিস্তানকে এখনই বাংলাদেশ বলা হবে।

১৯৭০ এর নির্বাচন
1970 সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে মুজিব নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। তার দল ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পূর্ব পাকিস্তানের কট্টর মৌসুমের দুইটি আসন দখল করে। পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকরা মুজিবের বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবির বিরুদ্ধে সম্পূর্ণভাবে ছিলেন।

৭ ই মার্চ এর ভাষণ
আওয়ামী লীগকে প্রাদেশিক সরকারের গঠনতন্ত্র থেকে বিরত রাখার জন্য তখন পাক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদে বিলম্বিত হন। 1971 সালের 7 মার্চ ঢাকার রেসকোর্স গ্রাউন্ডে একটি ঐতিহাসিক ভাষণে মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতার আহ্বান জানান। 

ইয়াহিয়া খান মার্শাল আইন ঘোষণা করেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ এবং শেখ মুজিবের গ্রেফতারের আদেশ দেন।

গণহত্যা ও  বাংলাদেশের স্বাধীনতা
1971 সালের ২5 মার্চ রাতে পাকিস্তানি বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট চালু করে নির্দোষ বাঙালিদের বড় আকারের গণহত্যা শুরু করে। শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং জনগণকে পাকবাহিনীর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান। পরে ২৬ এ মার্চ আওয়ামীলীগ নেতা এম. এ. হান্নান 

ও ২৭ এ মার্চ মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। 



নতুন দেশ প্রথম সরকার পায়
এপ্রিল 17, 1971 সালের বাংলাদেশ গণপ্রজাতন্ত্রী প্রথম সরকার গঠন করা হয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে প্রেসিডেন্ট করা হয়। এর পরেই মুক্তিবাহিনী গঠন করে এবং পাকসেনাদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে শুরু করে।

সর্বশেষে বিজয়
নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ৩ লাখ বাঙালি নিহত হওয়ার পর পাকবাহিনী মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহযোগিতার বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করে। একটি নতুন জাতির জন্ম হয়- বাংলাদেশ শেখ মুজিবুর রহমান 1 জানুয়ারি, 197২ সালে দেশে ফিরেন এবং যুদ্ধক্ষেত্রের দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

পুনর্নির্মাণের শুরু
মুজিব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে মানবিক ও উন্নয়ন সহায়তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে দেশ পুনর্গঠন। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য তিনি তার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত ছিলেন, তিনি এক পক্ষের শাসন পরিচালনা করেন। সব রাজনৈতিক দলগুলি বাকশাল নামে পরিচিত পরিচয়পত্রের এক ছাতার নিচে এসেছিল।

গুপ্ত হত্যা:
1975 সালের 15 আগস্টের রাতে রাস্তায় সেনা কর্মকর্তাদের একটি দল মুজিব এবং তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করে দুই মেয়েকে ছাড়া। এই নৃশংস হত্যাকান্ডের ফলে নবজাতকের ইতিহাসে একটি অযৌক্তিক ধূর্ততা ছড়িয়ে পড়ে নি, বরং দেশটিকে রাজনৈতিক ভ্যাকুয়ামে নিয়ে এসেছিল। গণতন্ত্রের অবসান ঘটাতে শুরু করে এবং পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার একটি বড় বাধা ছিল। 

উপরের আলোচনা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ভাবে আলোচনা করা হলো।  আমি এখন যা বলবো তা হচ্ছে, অতীতে দেশে শিক্ষিতের হার কম ছিল, তারা বুজতে ভুল করেছিল , কিন্তু বর্তমানে দেশের শিক্ষিতের হার ৫০% এর বেশি, এখনো কেন স্বাধীনতার ঘোষক ও জাতির পিতা প্রশ্নে বিভাজন থাকবে ? কিছুদিন আগে আমি চুল কাটাতে সেলুন গেলে এক গুরুজনের সাথে কথা কাটাজাতি হয়, উনার বক্তব্য ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ক্ষমতার লোভে মুক্তিযুদ্ধ বাঁধিয়েছেন।  এইটা নিয়ে অনেক কথা হয়। তখন মনে হয়ে ছিল বিষয়টি নিয়ে কিছু লিখবো, তাই আজ লিখলাম। 

মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে অনেক আগে, কিন্তু দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র এখনও চলছে।বিভিন্ন ভাবে দেশের অগ্রগতি বাধা পাচ্ছে।  তবে আশার কথা এটাই যে বর্তমান সরকারের হাত ধরে দেশ অনেক এগিয়েছে, কিন্তু মনের দিক থেকে আমরা অনেক পিছনে আছি।  এখনও অনেক বড় যুদ্ধ বাকি আছে, তা হলঃ 

  • বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড, জাতীয় চার নেতার হত্যাকান্ড সহ স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী সময় থেকে বর্তমান পর্যন্ত সকল রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে। 
  •  রাজাকারদের বিচার দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। 
  • রাজাকারদের পরবর্তী প্রজন্মের সন্তানরা যেন দেশ বিরোধী কর্মকান্ডে জড়িত হতে না পারে সে জন্য তাদের উপর নজরদারি রাখতে হবে, বিশেষ করে তাদের সম্পদসমূহ বাজেয়াপ্ত করতে হবে। 
  • দেশের দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে সরকার কে কঠোর হতে হবে। 
  • সবচেয়ে বড় বিষয় জাতীয় বিষয়ে দল ও মত নির্বিশেষে সবাইকে এক হতে হবে। 
  • সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। 

পরিশেষে বলতে চাই, আমার উদ্দেশ্য কোনো দলকে হেয় করা নয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  জাতির জনক, স্বাধীনতার ঘোষক কিন্তু তার মানে এইনয় মুক্তিযুদ্ধে মেজর জিয়াউর রহমান এর কোনো অবদান ছিল না।  প্রত্যেক ব্যক্তি কে নিজনিজ সন্মান পাওয়ার অধিকার আছে। আমি আশা করি সব সমস্যা দূর করে আমরা অচিরে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াব ইনশাল্লাহ। 

রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০১৭

সীমান্তের নীলাঞ্জনা। পর্ব ২ (বাড়ি ফেরা )

সীমান্তের নীলাঞ্জনা 


পর্ব ২

 বাড়ী  ফেরা 

দীর্ঘ প্রায় ২ ঘন্টা যাবৎ ড্রাইভ করে রাত ৪ টার সময় বাড়ির গেটে পৌঁছে গাড়ির হর্ন বাজাতেই পরেশ দা গেটে হাজির হয়ে তৎক্ষণাৎ গেট খুলে দিলো। গাড়ি বাড়ি তে ঢোকার সাথে সাথে দরজা বন্ধ করে দৌড়ে গাড়ির পিছন থেকে এসে দরজা খুলতেই চোখ কপালে তুলে বললো

পরেশ : ও বাবু এটা কিগো? এ যে ফুলপরীর মতো দেখতে। এ কে কোথায় পেলে?

সীমান্ত : কথা কম বলে আগে একে ঘরে নিয়ে গেস্ট রুম শুয়ে এ নিয়ে যেতে সাহায্য করো।  রাত অনেক হয়েছে সব কথা পরে শুনা যাবে।

পরেশ : একি বাবু উনার কাপড় তো ভেজা, শরীর ও গরম মনে হচ্ছে।  কি করবো?

সীমান্ত : ঠিক আছে, তুমি আমার জন্য কফি করে নিয়ে এসো, দেখছি কি করা যায়।

 সারা বাড়িতে কোনো মহিলা নেই, মাত্র দুইজন লোক পরেশ আর সীমান্ত। ওর জন্য এত রাতে কাপড় পাবে কোথায়, এই ভেবে  নিজ ঘরে যেয়ে আলমারিটা খুললো সীমান্ত। আলমারি খুলতেই মায়ের শাড়ির দিকে চোখ পারে সীমান্তের। মায়ের মৃত্যুর পর থেকে এই শাড়িটি এইভাবেই সাজানো ছিল, যখনই মায়ের কথা মনে হতো তখন এই শাড়িটিকে দেখতো। আজ এটা তাও আবার অপরিচিত কাউকে পড়তে দিতে হবে এটা মন মানতে চায় না। তার পরে ও মেয়েটির কথা ভেবে শাড়িটি বের করে গেস্ট রুম এ গেলো সীমান্ত। ততক্ষনে মেয়েটির ঘুম ও হালকা হয়ে এসেছে, তাই ঘরে ঢোকার শব্দেই তার ঘুম ভেঙে যায়____

নীলাঞ্জনা : আমি এখানে কেন?

সীমান্ত : কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তাই আর ডাকিনি, ইটা আমার বাসা। শাড়িটা এখনো ভেজা, নিন এটা পাল্টে নিন।  খুদা লাগলে টেবিল এ খাবার দেয়া আছে , খেয়ে শুয়ে পড়ুন।  সকাল এ কথা হবে, বাই।

নীলাঞ্জনা : ধন্যবাদ।

এইবলে পরেশ এর  থেকে কফির কাপটি নিয়ে বাগানে চলে গেলো সীমান্ত ---------

সীমান্তের নীলাঞ্জনা 

পর্ব ১
পরিচয় 

প্রতিবারের মত এইবার ও টেন্ডার পাওয়ার পর খুশি শেয়ার করার জন্য কাউকে না পেয়ে নিজ গাড়ি নিয়ে সাথে কিছু হার্ড ড্রিঙ্কস এর বোতল নিয়ে লং ড্রাইভে যেতে শুরু করলো সীমান্ত। গন্তব্য জানা নেই , তবে যাচ্ছে ঢাকা - মাওয়া হাইওয়ের পথ ধরে। রাত আনুমানিক ২.০০ হবে, গাড়ি আশুলিয়া ক্রস করে একটি নীরব জায়গা দিয়ে যাচ্ছে , প্রচন্ড রকমের বৃষ্টি হচ্ছিলো, হটাৎ করে ভুতের মতো সাদা সাড়িতে মোড়ানো ৫ফুট ৪ ইঞ্চি লম্বা একটা ফর্সা মেয়ে গাড়ির সামনে আসে দাঁড়িয়ে গেলো , বারংবার হর্ন বাজাতে বাজাতে এবং প্রচন্ড হার্ড ব্রেক করে গাড়িটা একেবারে তার সামনে এসে থামলো। এত রাত, প্রচণ্ড বৃষ্টি, চারপাশে কেউ নেই, ভূত-পেত্নী নয়ত, এর মধ্যে নেশা ও কিছুটা পেয়ে বসেছে। কি করবে বুঝে উঠতে না পেরে গাড়িতে বসে রইলো সীমান্ত, মেয়েটিও নাছোড় বান্দার মতো দাঁড়িয়ে রইল।  আইভৱে কিছুক্ষণ থাকার পর অনেকটা রাগান্নিত হয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়লো সীমান্ত, মেয়েটি কিছু বলে ওঠার আগেই গালে কোষে একটা চর বসিয়ে দিল।  

  
সীমান্ত : দেশে এত গাড়ি থাকতে আমার গাড়িটি বেছে নিলেন মরার জন্য। আর কোনো গাড়ি পাওয়া গেল না।

মেয়ে : চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো কথা বলছে না। 

সীমান্ত : hello . আমি আপনাকে বলছি , শুনতে পাচ্ছেন।  বাড়ি কোথায় ? এত রাত এ রাস্তায় কি করছেন? 

মেয়ে : এখনও নিস্তব্ধের মতো দাঁড়িয়ে আছে।  কিছুই বলছে না।

সীমান্ত : আহা। আচ্ছা বিপদে পড়লাম তো দেখছি, কোথায় যাবেন? ঠিকানা মনে নেই, নাকি কথা বলতে পারেন না। 

মেয়ে : ঠিকানা বললে কথা বলতেন না। আর এতক্ষন দাঁড়িয়ে সন্মান দিতেন না।

সীমান্ত : thank god. আপনি কথা বলতে পারেন। আচ্ছা আসুন গাড়িতে বসে কথা বলি, বৃষ্টির জন্য বাইরে দাঁড়ানো যাচ্ছে না।  তাছাড়া চারপাশে কোনো ছাউনি ও দেখছি না। 

এই কথা বলে গাড়ির দিকে গেলো সীমান্ত, কিন্তু মেয়েটি ইতস্তত বোধ করছে। 

সীমান্ত : কী হলো, আসুন।

এই বলে গাড়িতে ঢুকে ওপর সাইড এর দরজা টা  খুলে দিল, মেয়েটি ও কিছু না বলে গাড়ি তে বসলো।
সীমান্ত ড্রাইভিং সিট্ থেকে তোয়ালে টি তুলে মেয়েটির সামনে দিয়ে বললো-

সীমান্ত : সারা শরীর ভেজা তোয়ালে দিয়ে মাথাটি পরিষ্কার করুন, নয়তো ঠান্ডা লেগে যাবে।

মেয়ে : থ্যাংক ইউ। 

সীমান্ত: এইবার ঠিকানা বলুন। পৌঁছে দেই।  

মেয়ে : যেখান থেকে এসেছি, সেখানে যেতে চাই না। আর এখন কোথায় যাবো, কি করবো কিছুই জানি না। 

এই বলে কাঁদতে শুরু করলো মেয়েটি।

সীমান্ত : প্লিজ, কাঁদবেন না।  আপনাকে ডিপ্রেস লাগছে। কিছু মনে না করলে চলুন বাসায় যাই, সকাল হলে সব কিছু শোনা যাবে। আচ্ছা আপনার নামটা কি?

মেয়ে : নীলাঞ্জনা।  আর আপনার। 

সীমান্ত: সীমান্ত।  এই বলে গাড়িটি ইউ টার্ন করে ঢাকা র পথে সীমান্ত। -------------





বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৭

সপরিবারে ঘুরে আসুন বাংলার তাজমহল থেকে আর ছুটির দিনটি উপভোগ করুন পরিবার কে সাথে নিয়ে।


বাংলার  তাজমহল

বাংলার তাজমহল হল ভারত এ অবস্থিত মুঘল স্থাপত্য নিদর্শন আগ্রার তাজমহলের ক্ষুদ্রতর সংস্করণ। এটি ঢাকা থেকে ২০ মাইল উত্তর - পূর্বে সোনারগাঁ , নারায়ণগঞ্জ -এ অবস্থিত। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালে ডিসেম্বর মাসে এবং এর বায় ধরা হয়েছিল 56 মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী ছবি নির্মাতা  আহসান উল্লাহ মনি বলেন, ' সবাই স্বপ্ন দেখে তাজমহল কে নিজ চোখে একবার দেখার, কিন্তু বেশিভাগ মানুষের পক্ষে তা সম্ভব নয়। কারণ এ দেশের ৫০ ভাগের ও বেশি মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বাস করে। তাদের স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে   আমার এই প্রচেষ্টা। '

২০০৩ সালে আর এর নির্মাণ কাজ শুরু হলেও এটি  নির্মাণের স্বপ্ন দেখেন ১৯৮০ সালে যখন তিনি প্রথমবার তাজমহল ভ্রমণ করেন। এরপর তিনি আরো ছয়বার তাজমহল দেখতে যান, এমনকি তিনি এতটাই সন্তুষ্ট ছিলেন যে তিনি স্থপতিদের একটি দল ভাড়া নিয়েছিলেন এবং তাদের পরিমাপ করতে ভারত পাঠিয়েছিলেন। তিনি বলেন: "আমি আসল তাজের মতো একই মার্বেল এবং পাথর ব্যবহার করেছি। আমরা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করেছিলাম, এটি কেন কম সময় নেয়। অন্যথায় এটি ২0 বছর এবং ২২,000 শ্রমিককে সম্পন্ন করতেহতো।

অবশেষে ২০০৮ সালে এটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। সত্যি এটি হয়তো সম্পূর্ণ কার্বনকপি নয়, কিন্তু তার  এটি অসচ্ছল ভ্রমণপিয়াসী মানুষদের মনকে কিছুটা হলেও প্রশান্তির পরশ দিবে।  


সমস্ত নিয়ম কানুন এবং  প্রবেশ মূল্য :
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
1) এন্ট্রি ফি ৫০ টাকা  / প্রতি ব্যক্তির
2) আপনি ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা নিয়ে আসতে পারেন।


আপনি কিভাবে বাংলার তাজমহলের কাছে যেতে পারবেন?
- - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - - -
আপনি নিচের ২ টির যে কোন ১টি  উপায় অবলম্বন করে সেখানে যেতে পারেন:

1) ঢাকা থেকে বাস দিয়ে  কাঁচপুর সেতু পার হয়ে বামদিকে  - নরসিংদী / সিলেট মহাসড়কে বোরপা পর্যন্ত যেতে হবে,পরে সি এন জি  বা অটোরিকশা করে পেরাবো  বাংলার তাজমহল

2) সরাসরি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মদনপুর যান,সেখান থেকে বাম দিকে গাজীপুর সড়কে ধরে যান, পেরাবো বাংলার তাজমহল।

পরিশেষে বলতে পারি সপরিবারে ঘুরে আসুন বাংলার তাজমহল থেকে আর ছুটির দিনটি উপভোগ করুন পরিবার কে সাথে নিয়ে। শেষে যেন কবির ভাষায় বলতে না হয়
দেখিতে গিয়েছি পর্বত মালা ,
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু
দেখা হয় নাই শুধু চক্ষু মেলিয়া
ঘর থেকে শুধু দু পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিসের উপর
 একটি শিশির বিন্দু।

 ধন্যবাদ।
রচনাঃ মোঃ আনোয়ার সাদাত 



জেনেনিন আহসান মনজিল এর সঠিক ইতিহাস ও পরিদর্শন সময়সূচি



 আহসান মনজিল
ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ও সাংস্কৃতিক ঐশ্বর্যমন্ডিত স্থানগুলোর মধ্যে আহসান মনজিল অন্যতম। আহসান মনজিল পুরোনো ঢাকার সদরঘাটের নবাববাড়ি নামক স্থানে বুড়িগঙ্গা নদীর কোল ঘেঁষে অবস্থিত। মুগল যুগে, জামালপুর পরগণা  (জেলা) এর জমিদার শেখ এনায়েত উল্লাহ  এটি নির্মাণ করেন এবং এটি "রঙ্গমহল" (রংমহল) নামে নামকরণ করেন।। এই স্থানটি তখন কুমারটুলি নামে পরিচিত ছিল। এ তিনি এখানে সুন্দর মেয়েদের নর্তকী হিসেবে দেশ ও বিদেশ থেকে নিয়ে  আসতেন  এবং তাদেরকে সুন্দর পোশাক ও মূল্যবান অলঙ্কার দিয়ে এইখানে রাখতেন । একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ঢাকার ফৌজদার (মোগল সম্রাটের প্রতিনিধি) সেই সময়ে তাদের মধ্যে একজন সুন্দরী মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল। তিনি এক রাতে শেখ এনায়েত উল্লাহকে  আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং বাড়িতে ফিরে আসার পর তাকে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করেন । রাগ এবং দুঃখের মধ্যে সেই মেয়ে আত্মহত্যা করেছিল । ২0 তম শতাব্দীর শুরুতে ধ্বংসপ্রাপ্ত রাজপ্রাসাদের উত্তর-পূর্ব কোণে শেখ এনায়েত উল্লার একটি কবর ছিল।

সম্ভবত প্রায় ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে নওয়াব আলীবর্দী খানের সময়ে শেখ এনায়েত উল্লার পুত্র শেখ মতি উল্লাহ, ফরাসি ব্যবসায়ীদের কাছে এই সম্পত্তি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। এই সম্পত্তি পাশ বরাবর একটি ফরাসি বাণিজ্য ঘর ছিল। এই সম্পত্তিটি কেনার পর ট্রেডিং হাউস ধনী হয়ে উঠেছে। সেই সময়ে, সম্রাট আওরঙ্গজেবের ডিক্রি অনুসারে কোনও কর পরিশোধ না করেই ফরাসি ব্যবসায়ীরা এখানে ব্যবসা করতে পারত। সেই সময়ে, তারা একটি বড় প্রাসাদ তৈরি করে এবং নতুন কেনা সম্পত্তির মিষ্টি জলের জন্য একটি পুকুর খনন করে, যা এখনও আহসান মানজিলের আওতায় রয়েছে। ইংরেজি-ফরাসি যুদ্ধে, ফরাসি পরাজিত হয় এবং তাদের সমস্ত সম্পত্তি ইংরেজি দ্বারা দখল করা হয়। ১৭৫৭ সালের ২২ জুন, ফরাসিরা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে কুমারতুলীর সামনে ৩৫ টি নৌযানের একটি বহর দিয়ে চলে যায়।

১৮১৪ সালের প্যারিস চুক্তির ভিত্তিতে, ফরাসিরা ঢাকায় তাদের সব হারানো সম্পত্তি দাবি করে এবং ১৮২৭ সালে সম্পত্তিটি আবার ফিরে পায়। ইংরেজদের ক্ষমতার সাথে টিকতে না পেরে, ফরাসিরা উপমহাদেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয় এবং  তারা ঢাকায় তাদের সব সম্পত্তি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয় । সুতরাং ১৮৩০ সালে, কুমারতুলি এর ব্যবসার হাউস খাজা আলিমুল্লাহ কিনে নেয় এবং নিজ বাসভবন হিসেবে ব্যবহার করেন।তার মৃত্যুর পর, তার পুত্র খাজা আবদুল গনি তার সম্পত্তির সংস্কার করেন এবং তার পুত্র আহসান উল্লাহ এর নামানুসারে  "আহসান মানজিল" নামকরণ করেন। পুরনো বিল্ডিংয়ের পূর্ব দিকে, তিনি একটি নতুন নকশা দিয়ে একটি নতুন ভবন তৈরি করেন, এবং পুরোনো ভবনটিরও  সংস্কার কাজ করেন। তখন থেকে, পুরানো ভবনটিকে "অন্দর  মহল" বলা হয় এবং নতুন ভবনটিকে "রং মহল" বলা হয়।





১৮৮৮ সালের ৭ ই এপ্রিল সন্ধ্যা ৭ টার দিকে একটি ভয়াবহ টর্নেডো আঘাত হানে, এতে আহসান মানজিল মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ও পরিত্যক্ত হয় । কলকাতার একজন ব্রিটিশ প্রকৌশলী প্রাসাদ পরীক্ষা করে মত দিয়েছেন যে "রংমহল" ব্যতীত, রাজপ্রাসাদের অন্যান্য অংশ পুনরায় পুনর্গঠন করতে হবে। তাই খাজা আবদুল গনি ও তার ছেলে আহসানউল্লাহ রাজপ্রাসাদ পুনর্নির্মাণের জন্য পূর্ণ মনোযোগ দেন। উভয় ভবন পুনর্নির্মাণ করা হয়।স্থানীয় প্রকৌশলী গোবিন্দ চন্দ্র রায় এর তত্ত্বাবধানে   নতুন নকশায়  এটি  পুনর্নির্মাণ করা হয়।

১৯০১ সালে খাজা আহসানউল্লাহর মৃত্যুর পর তার উত্তরসূরী অভ্যন্তরীণ পরিবারের ঝগড়া কারণে আহসান মানজিলের মহিমা নষ্ট হয়ে যায়। ১৯৫২ সালে, ঢাকা নবাব কোর্ট এর  তত্ত্বাবধানে এটি  সরকারি সম্পত্তি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয় । আহসান মঞ্জিল প্রাসাদের ঐতিহাসিক গুরুত্ব ও স্থাপত্যগত তাৎপর্য  বিবেচনা করে, সরকার পাকিস্তান শাসনের পর থেকে এটি সংরক্ষণের চেষ্টা করছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান  আহসান মনজিল নিলামের প্রস্তাবটি বাতিল করে দেয়। ২ নভেম্বর, ১৯৭৪ সালে, তিনি সঠিক সংরক্ষণের পর একটি যাদুঘর এবং পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন করার আদেশ দেন।১৯৮৫ সালে, ঢাকা জাতীয় যাদুঘর সম্পত্তি অর্জন করে এবং ইতিহাস অনুসরণ করে একটি বৃহদায়তন যাদুঘর হিসেবে পুনর্নির্মাণ করে।

পরিদর্শন সময়সূচি 

গ্রীষ্মকালীন সময়সূচী  (এপ্রিল - সেপ্টেম্বর )
শনিবার  থেকে বুধবার   সকাল ৯.৩০ - বিকাল ৫.৩০ মি.
শুক্রবার                        বিকাল ৩.০০ - সন্ধ্যা ৭.৩০ মি. পর্যন্ত।   

শীত কালীন সময়সূচী  (অক্টোবর  - মার্চ  )
শনিবার  থেকে বুধবার   সকাল ৯.৩০ - বিকাল ৪.৩০ মি.
শুক্রবার                        বিকাল ২.৩০ - সন্ধ্যা ৭.৩০ মি. পর্যন্ত।   

প্রতি বৃহস্পতিবার ও  সরকারি ছুটির দিন জাদুঘর বন্ধ থাকবে।

জাদুঘর প্রবেশ মূল্য 

বাংলাদেশী (প্রাপ্ত বয়স্ক)       ২০ টাকা
বাংলাদেশী (অপ্রাপ্ত বয়স্ক)     ২ টাকা 
সার্কভুক্ত দেশের নাগরিক   ৫০ টাকা 
অন্যান্য বিদেশী নাগরিক   ১০০ টাকা
প্রতিবন্ধীদের টিকেট লাগে না।